কলকাতা: হিঙ্গলগঞ্জে ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে রিভিউ বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সতর্ক বার্তা দিয়ে বলেন, অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই উদ্ধার কার্য ভাল করে করতে হবে। মানুষ যেন বিপদে না পড়ে। কারও যেন কোনও অভিযোগ না থাকে। কারা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য, তা যথাযথ ভাবে খতিয়ে দেখে তারপরই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও রকম ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ তিনি এবার সহ্য করবেন না বলে কড়া বার্তা দেন।
এ দিন আকাশপথে উত্তর চব্বিশ পরগণার উপকূলবর্তী এলাকাগুলি পরিদর্শন করার পর হিঙ্গলগঞ্জে প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়াই এখন সরকারের মূল লক্ষ্য৷ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বৈঠকে জেলার আধিকারিকদের থেকে সমস্য তথ্য জানেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঝড়ে ক্ষয়-ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তিনি আলোচনা করেন প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে। ত্রাণ শিবিবরগুলিতে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায় সেব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে কর্তব্যরত সরকারি অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ঝড় বিধ্বস্ত মানুষদের জন্য দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, সাগরের মতো দুই চব্বিশ পরগণার উপকূলবর্তী এলাকাতেই ঘূর্ণিঝড় এবং জলস্ফীতির জেরে প্রায় ১ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ নষ্ট হয়েছে ৪০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি, ৭ হাজার জলাশয়৷ পাশাপাশি ১৬০০ কিলোমিটার রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ মমতা জানান, পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে৷
আমফানের পরে ত্রাণ বণ্টন নিয়ে রাজ্য জুড়ে শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল৷ এবার আগে থেকে কড়া মনোভাব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সতর্ক রাজ্য প্রশাসনও৷
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল ICSE ও CBSE-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার শুনানি
মুখ্যমন্ত্রী এ দিনও জানান, দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার মানুষের কাছে ত্রাণ এবং ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে যাবে৷ মমতা বলেন, ‘যাঁদর ঘর বাড়ি, কৃষি জমি, মাছ নষ্ট হয়েছে তাঁরা দুয়ারে ত্রাণ গ্রামে গ্রামে এবং ব্লকে ব্লকে চলবে৷ ৩ থেকে ১৮ জুনের মধ্যে মানুষ এখানে এসে অভিযোগ জমা করবে৷ এই শিবির পুরোপুির সরকারি অফিসাররা চালাবেন৷ ১ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণের টাকা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে৷’
খাবার এবং ত্রাণ নিয়ে যাতে কোনও অভিযোগ না থাকে, তা নিয়েও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মু্খ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘রিলিফ ক্যাম্পগুলিতে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন টিম পাঠাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রিলিফ সেন্টারে যাঁরা রয়েছে তাঁদের যেন কোনও অসুবিধা না হয়। খাবার, ত্রাণ, ত্রিপল নিয়ে যেন কোনও বঞ্চনা না হয়। বেবি ফুডের দিকে নজর রাখতে হবে, জানালেন মমতা। ইয়াসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস্যজীবীদের। তাদের জন্য স্বর্ণমৎস্য স্কিম রয়েছে বলে জানালেন মমতা।